চট্টগ্রামকে উড়িয়ে ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখলো বরিশাল

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এলিমিনেটর ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। আগে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৩৫ রানের পুঁজি পায় চট্টগ্রাম। লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই সৌম্য সরকারের উইকেট হারালেও কাইল মায়ার্সের ঝড়ো ফিফটির সঙ্গে অধিনায়ক তামিম ইকবালের অপরাজিত অর্ধশতকে ৩১ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় দক্ষিণের দলটি। এই জয়ে ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখলো বরিশাল।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বরিশাল দলের অধিনায়ক তামিম। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই তানজিদ হাসান তামিমকে হারায় চট্টগ্রাম। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে টপ এজ হয়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে ধরা পড়তে হয় য়াগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ানকে। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি দলে সুযোগ পাওয়া ইমরান উজ্জামান। ওবেদ ম্যাকয়ের স্লোয়ার ডেলিভারিতে মায়ার্সের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

জশ ব্রাউনের ব্যাটে অবশ্য পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৪০ রান তোলে চট্টগ্রাম। ব্রাউনের সঙ্গে টম ব্রুস জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও সেটা করতে দেননি ম্যাকয়। বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে পুল করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে মিলারের হাতে ক্যাচ দেন। অস্ট্রেলিয়ার এই ওপেনার ফেরেন ২২ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলে।

ব্রুস, সৈকত আলীরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। এদিন ব্যাট হাতে ভালো করতে পারেননি রোমারিও শেফার্ডও। মাঝে শুভাগত হোমের ২৪ রানের ইনিংস কেবল চট্টগ্রামের রান একশ পেরিয়েছে। শেষদিকে পুঁজিটা বড় করেছেন সালাউদ্দিন সাকিল এবং নিহাদ উজ জামান। বরিশালের হয়ে দু’টি করে উইকেট নেন মায়ার্স, সাইফউদ্দিন এবং ম্যাকয়।

রান তাড়ায় বরিশালের শুরুটা যদিও ছিল অস্বস্তিময়। মৌসুমে প্রথমবার ওপেন করার সুযোগ পেয়ে সৌম্য সরকার প্রথম ওভারেই উইকেট বিলিয়ে দেন শুভাগত হোমকে রিভার্স সুইপ করার চেষ্টায়। পরের ওভারের প্রথম বলে সুযোগ দেন তামিমও। কিন্তু আল আমিন হোসেনের বলে থার্ডম্যান সীমানায় ক্যাচ নিতে পারেননি সৈকত আলি। উল্টো চার হয়ে যায়। জীবন পেয়ে ওই ওভারে আরও দুটি চার মারেন তামিম।

এরপর দুই প্রান্ত থেকেই রানের যে ফোয়ারা ছুটতে থাকে, তাতে বাঁধ দিতে পারেনি চট্টগ্রাম। শুভাগতকে ছক্কায় ওড়ান মেয়ার্স, দুটি চার মারেন তামিম। তাদের ব্যাটিং তান্ডবের দিনে বরিশাল পায় পাওয়ারপ্লেতে সর্বোচ্চ ৭৩ রান। আর তাতেই যেন ম্যাচ জয়ের পথ সহজ হয়ে যায় বরিশালের। ৫৪ বলে তামিম-মায়ার্স জুটির যখন ৯৮ রান, তখনই চট্টগ্রামকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রু এনে দেন বিলাল খান।

২৫ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে কাইল মায়ার্স যেতে পারেননি বেশিদূর। পরের ওভারে বিলাল খান এসেই ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন ভয়ংকর হয়ে ওঠা মায়ার্সকে। তামিম এরপর দলের সংগ্রহ এগিয়ে নিয়ে যান ডেভিড মিলারকে নিয়ে। তবে দল যখন জয়ের বন্দর থেকে কেবল ১১ রান দূরে, রোমারিও শেফার্ডে বলে উইকেট হারান ১৭ রানে থাকা ডেভিড মিলার। ২ বাউন্ডারির সাহায্যে ১৩ বলে ১৭ করেন মিলার। এরপর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে জয়ের বাকি কাজটা শেষ করে আসেন তামিম ইকবাল।

৪১ বলে তামিম পূর্ণ করেছেন অর্ধশতক। রান সংগ্রাহকদের শীর্ষস্থানে থাকা তামিমের ব্যাট থেকে এবারের বিপিএলে এটি তিন নম্বর ফিফটি। ফাইনালে ওঠার চ্যালেঞ্জে তাই আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন তামিমরা। প্রথম কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রংপুর রাইডার্সের ম্যাচে হেরে যাওয়া দলের বিপক্ষে বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে বরিশাল।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *