গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলা শুরুর পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে এ পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ঘাঁটিতে শতাধিক হামলা হয়। তবে মার্কিন সেনা মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানায়।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড জানায়, রোববার জর্ডানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ঘাঁটি ‘টাওয়ার টোয়েন্টি টু’তে হয় এ হামলা। এখান থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে সিরিয়ার আল তানফেও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি। কাছাকাছি দু’টি সেনাঘাঁটি থাকার পরও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে হামলার শিকার হলো মার্কিন সেনারা। প্রাণহানির পাশাপাশি আহত হয় ২৫ জন।
এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলার পেছনে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীদের দায়ী করেন তিনি। যথাসময়ে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে অপরাধীদের।
ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক নামের একটি গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে এ ধরণের হামলার সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ইরান। দাবি, সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ী করা হচ্ছে তাদের।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেন, আগেও স্পষ্টভাবে বলেছি, গাজায় ইহুদিদের শিশু ও গণহত্যার জবাব দিচ্ছে অঞ্চলটি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো। তবে তারা ইরানের নির্দেশে কিছু করছে না। নিজেদের মৌলিক আদর্শ ও নীতির ওপর ভিত্তি করে পদক্ষেপ নেয় তারা।
সেনা নিহতের ঘটনায় খুব শিগগিরই বড় ধরণের প্রতিশোধ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় আকারে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অ্যালিসন ম্যাকমানাস বলেন, প্রথমবারের মতো মার্কিন সেনারা নিহত হওয়ার ঘটনাকে পেন্টাগন অবশ্যই হালকা বিষয় হিসেবে নেবে না। অবশ্যই কড়া জবাব দেবে। মার্কিন নেতাদের অনেকে হয়তো সরাসরি ইরানে হামলা চাইবেন। তবে এতে আরও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়বে সংঘাত। অঞ্চলটিতে অস্থিতিশীলতা আরও দীর্ঘমেয়াদী হবে।
গত মাসে ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহতের পর ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে বড় ধরণের বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুতিদের একের পর এক হামলার জবাবে, ই্য়েমেনেও চলছে পেন্টাগনের নিয়মিত অভিযান।