অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে টিআইবি

টিআইবি কোনো দলের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়-অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে। টিআইবিকে বিএনপির অঙ্গসংগঠন বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য বিব্রতকর। পাশাপাশি সমালোচক মাত্রই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভাবার মানসিকতার প্রতিফলন। টিআইবির পক্ষ থেকে রোববার পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে টিআইবির এক বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ওই বিবৃতিতে টিআইবি বলেছিল, তফশিল ঘোষণার আগে ও পরের রাজনৈতিক ও নির্বাচনি পরিস্থিতি বিবেচনায় মনে হচ্ছে এবারের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, টিআইবি বিএনপির অঙ্গসংগঠন কিনা সেটিও ভেবে দেখতে হবে।

টিআইবির নতুন বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সুষ্ঠ নির্বাচন-দেশের নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনকালীন সরকার, প্রশাসন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নিরপেক্ষতার ওপর নির্ভর করে। সব রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর জন্য সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিত করেই শুধু অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা সম্ভব। টিআইবি মনে করে বিষয়টি মন্ত্রীর বোঝার মতো বিচক্ষণতা রয়েছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করায় বিএনপির সঙ্গে টিআইবিকে জড়িয়ে মন্ত্রীর এই বক্তব্য অনভিপ্রেত।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিআইবি একটি অরাজনৈতিক সংগঠন এবং কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করে না। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন মন্ত্রী ও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তির এ বক্তব্য পুরোপুরি অমূলক ও হতাশাজনক। তিনি বলেন, টিআইবি এতে মোটেই অবাক বা বিচলিত নয়।

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, দুর্নীতিমুক্ত, গণতান্ত্রিক ও সুশাসিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে উপযুক্ত রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণে কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠান। ফলে এ ধরনের অপবাদ দেওয়ার চর্চা নতুন কিছু নয়। কোনো গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন বা পরামর্শ অপছন্দ হলেই আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই টিআইবির প্রতি বিষোদগারে লিপ্ত হয়। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় সরকারের সময় টিআইবিকে বন্ধ করে দেওয়া, সারা দেশের ৬৪ জেলায় মামলার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। এমনকি, চলতি বছরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির পক্ষ থেকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই), টিআইবি ও সংস্থাটির কর্মকর্তাদের নিয়ে বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার চালানো হয়। তিনি বলেন, টিআইবির অবস্থান গণতন্ত্র ও সুশাসনের পক্ষে, অগণতান্ত্রিক ও সুশাসনকে বাধাগ্রস্ত করে এমন শক্তির বিপক্ষে। তবে একইসঙ্গে লক্ষণীয়, এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও পরিস্থিতি ভেদে এমন বিষোদগার টিআইবির নিরপেক্ষতাকেই প্রমাণ করে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *