বরিশাল প্রতিনিধিঃ আগামীকালের রোববার (০৭ জানুয়ারি) নির্বাচনে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পির সাহেব চরমোনাই।
আজ শনিবার বিকেলে বরিশালের চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে এক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
পির সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার নির্বাচন থেকে দেশের জনগণকে বিরত থাকতে হবে। যেখানে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ্যে জনসভায় বলেন, ‘ভারত আছে তো আমরা আছি’। আরেক প্রার্থী বলেছেন, ‘আমি শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রার্থী’। এ ধরনের বক্তব্যের পর যখন কোনো প্রতিবাদ করা হয় না, তাহলে সহজেই বোঝা যায় এ বক্তব্য আওয়ামী লীগেরই। কাজেই ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন করে দেশ ও দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের এত তাণ্ডব এবং মানুষকে জোর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটকেন্দ্রে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও আমরা বলতে পারি, ১০ থেকে ১২ শতাংশের বেশি লোক ভোট কেন্দ্রে যাবে না।
এ সময় বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম শায়খে চরমোনাই, বরিশাল জেলা ও মহানগর এবং চরমোনাই ইউনিয়ন শাখা নেতৃবৃন্দ। এতে কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
পির সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার ২০১৪ সালে করল একতরফা প্রহসনের নির্বাচন, ২০১৮ সালে করল রাতের ভোট আর ২০২৪ সালে এসে করছে ডামি নির্বাচন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত ৫ দফা দাবি মেনে নিতে আহ্বান জানান।
* ৭ জানুয়ারি একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করতে হবে।
* বিদ্যমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে।
* নিবন্ধিত এবং আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে, জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।
* বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিতে হবে এবং জাতীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পুনতফসিল ঘোষণা করবে।
* রাজনৈতিক কারণে বিরোধীদলের কারাবন্দি সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দিতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ইউনিয়ন শাখার সহসভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল হামিদের বাসায় গভীর রাতে পুলিশের তল্লাশির নামে হয়রানি ও পরিবারকে নাজেহালের বন্ধ এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, সরকার যে পথে হাঁটছে তা দেশ, জাতি ও মানবতার জন্য কল্যাণকর নয়। সে পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
আগামীকালের নির্বাচনকে কোনোভাবেই ভোট বলা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোন দল সরকার গঠন করবে, কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, সব স্পষ্ট। কোন আসনে কে বিজয় হবেন, তার তথ্যও স্পষ্ট। এ জন্য এটাকে ভোট বলার সুযোগ নেই। এ কারণে যে এই ভোটে কাউকে নির্বাচিত করার বা কাউকে হারিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবকিছু আগে থেকে নির্ধারিত হয়ে আছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এবারের ভোটে নৌকাকে বেছে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। নৌকা, নয়তো নৌকার স্বতন্ত্র প্রার্থী বা নৌকা সমর্থিত জাতীয় পার্টি অথবা আওয়ামী লীগের জোটভুক্ত কোনো প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে। দিন শেষে ভোট এক জায়গাতেই যাবে। কাজেই এটাকে নির্বাচন বলার কোনো কারণ দেখি না। ৭ জানুয়ারি যা হচ্ছে তা হলো নিজেদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি করে ক্ষমতা নবায়ন করে নেওয়ার নির্বাচন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।’