শেখ হাসিনার আমলের প্রবৃদ্ধির দাবি ছিল ‘ভুয়া’: ড. ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময় দেশের অর্থনীতির উচ্চ প্রবৃদ্ধি নিয়ে যা বলা হতো, তা ছিল ‘ভুয়া’। এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন না তোলার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে লন্ডন ভিত্তিক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস এসব কথা বলেন। একই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো আগ্রহ তার নেই।

রয়টার্স বলেছে, ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের অর্থনীতি ও বিশাল গার্মেন্টস শিল্পকে ঘুরে দাঁড় করানোর কৃতিত্ব দেয়া হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। যদিও তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বাকস্বাধীনতা ও ভিন্নমতকে দমন করার অভিযোগ রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি (হাসিনা) দাভোসে এসে দেশ কীভাবে চালাতে হয়, সে কথা সবাইকে বলেছিলেন। কেউ তখন প্রশ্ন করেননি। এটা মোটেও কোনো ভালো বিশ্বব্যবস্থা নয়। এর জন্য পুরো বিশ্ব দায়ী। তবে এটা বিশ্বের জন্য একটি শিক্ষা।

শেখ হাসিনা দাবি করেছিলেন, প্রবৃদ্ধিতে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। প্রবৃদ্ধি নিয়ে এমন মন্তব্যের উল্লেখ করে ৮৪ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, তিনি (হাসিনা) বলেছিলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার অন্য সবার চেয়ে বেশি। এটা একেবারে ভুয়া।

কেন তিনি এই প্রবৃদ্ধির হারকে ভুয়া বলে মনে করেন, সে বিষয়ে রয়টার্সকে বিস্তারিত কিছু বলেননি ড. ইউনূস। তবে ব্যাপক-ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির গুরুত্ব ও সম্পদের বৈষম্য কমানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রবৃদ্ধির হার দিয়েই সবকিছু বিবেচনা করার ব্যাপারে খুব একটা একমত নই। আমি চাই, একেবারে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে প্রতিটি মানুষের উন্নত জীবনমান। আর এ কারণেই আমি এমন অর্থনীতি চাই, যেখানে সম্পদ পুঞ্জীভূত করার ধারণা এড়িয়ে চলা হয়।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার কয়েক সপ্তাহের আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *