কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে অভাবের তাড়নায় জন্মের মাত্র ৫ ঘণ্টার মধ্যে কন্যা সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছেন বাবা-মা। উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের বানুরকুটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম বেগম শনিবার (১৭ জানুয়ারি) ভোর পাঁচটার দিকে নিজ বাড়িতে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। ওই সন্তানকে ভরণ পোষণ দিতে না পারার শঙ্কায় জন্মের মাত্র ৫ ঘণ্টা পর সকাল ১০টার দিকে সন্তানকে এক প্রতিবেশি মামাতো বোনের হাতে তুকে দেন তারা। নবজাতকটি ওই দম্পতির পঞ্চম সন্তান। চার বছর আগে ওই দম্পতি আরেক কন্যা সন্তানকে অজানা লোকের কাছে তুলে দেন বলেও জানা গেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম একজন বন্দর শ্রমিক। তিনি সোনাহাট বন্দরে শ্রমিকের কাজ করেন। তার তিন শতক জমি রয়েছে। তবে থাকার কোনো ঘর নেই। পরিবার নিয়ে ছোট ভাইয়ের ঘরে থাকেন তিনি। অভাবের সংসারে ইতোমধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে ৪ সন্তান। পঞ্চম সন্তান জন্ম নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী মামাতো বোন নিলাকী বেগম ও আলমগীর দম্পতিকে দিয়ে দেন।
এ বিষয়ে নবজাতকের বাবা শফিকুল ইসলাম জানান, তার থাকার কোনো ঘর নেই। শ্রমের সামান্য আয় দিয়ে অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা, তিন সন্তানের ভরণ পোষণ ও সংসারের খরচ চালানো তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। এসময় এর আগে আরেক সন্তানকে অন্যের কাছে তুলে দেয়ার বিষয়টিও স্বীকার করেন তিনি।
নবজাতকের মা মরিয়ম বেগম জানান, অভাবের তাড়নায় মেয়েকে অন্যের কাছে দিয়েছেন তারা। সন্তানকে বিক্রি বা টাকার বিনিময়ে দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ফেরদৌস জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিবেন বলে জানান তিনি।