বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় প্যারোলে মুক্তি পেয়ে এক হাতে হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় অংশ নিয়েছেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা।
স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার রাতে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান সারিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক গোলাম রব্বানীর বাবা হেলাল প্রামাণিক। বৃহস্পতিবার দুপুরে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গোলাম রব্বানীকে তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেন আদালত।
এরপর বিকেলে পুলিশ পাহারায় গোলাম রব্বানীকে বাবার জানাজায় অংশ নিতে দেওয়া হয়। এসময় তার এক হাতে হাতকড়া ছিল। যদিও তার দুইপাশে দাঁড়িয়ে জানাজায় অংশ নেয় পুলিশ।
এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় রব্বানীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে ছাড়া পেয়ে বাবার জানাজায় অংশ নেন গোলাম রব্বানী। জানাজার পরে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।’
হাতকড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘জানাজার সময় তার এক হাতে হাতকড়া ছিল। আসলে তিনি তো বন্দি। নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তার এক হাতে হাতকড়া ছিল।’
সম্প্রতি এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটায় বিষয়টিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে মন্তব্য করেছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্টস সোসাইটি (এইচআরএসএস) নামের এক মানবাধিকার সংগঠন। গত ১২ ডিসেম্বরে এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে, কারাবিধি অনুযায়ী আসামিরা প্যারোলে মুক্তি পান। কিন্তু কোনো ব্যক্তি সাজাপ্রাপ্ত না হলে হাতে হাতকড়া পরানোর বিষয়ে পুলিশ নমনীয় হতেই পারে। এ ক্ষেত্রে কোনো কড়াকড়ির বিধান নেই। তবে পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি কতটুকু তার ওপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (এক্ষেত্রে পুলিশ) নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারে।
এর আগে, গত ১০ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার জানাজা ও দাফনে অংশ নেন। সেসময় তার হাতেও হাতকড়া ছিল। পরে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়।