ভারতে বিবাহের পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করায় নওমুসলিম যুবকের স্ত্রী সহ গ্রেফতার ৫

ভারতে বিবাহের পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করায় মুকুল নামের নওমুসলিম হিন্দু যুবকের স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ী সহ ৫জনকে গ্রেফতার করেছে মোদির নেতৃত্বাধীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উত্তর প্রদেশের বিজনৌর জেলায় এই সাম্প্রদায়িক বর্ণবাদ ও রাষ্ট্রীয় ইসলাম বিদ্বেষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় পুলিশ জানায়, বিজনৌরের পুরানা ধামপুরের বাসিন্দা যশবন্ত সিং সায়মা নামের এক মুসলিম নারী, তার বাবা-মা শহীদ ও রুখসানা এবং দুই কাজী মাওলানা এরশাদ ও মাওলানা গুফরান এই ৫জনের বিরুদ্ধে তার ছেলে মুকুলকে জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করে বিবাহের অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রাদেশিক বে-আইনি ধর্মান্তর নিষিদ্ধকরণ আইন-২০২১ এর অধীনে এই ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিনিয়র পুলিশ সুপার ধর্ম সিং জানান, যশবন্ত সিং অভিযোগে বর্ণনা করেন, তার ছেলে মুকুল ইসলাম ধর্মাবলম্বী সায়মার প্রেমে পড়েছিলো এবং এক পর্যায়ে বিয়ে করতে চায়। সায়মা বিয়েতে রাজি হয়। কিন্তু হিন্দু ধর্ম গ্রহণে সে রাজি ছিলো না। তাই সে তার ছেলেকে ইসলাম গ্রহণ করতে চাপ দেয়। সায়মা তার বাবা-মা শহীদ ও রুখসানা এবং বিবাহের দুই কাজী মাওলানা এরশাদ ও মাওলানা গুফরান মিলে তাকে মুসলিম বানানোর পরিকল্পনা করেছিলো। ৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার মুকুলকে নিয়ে একটি মাদরাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তাকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়।

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, উত্তর প্রদেশ বে-আইনী ধর্মান্তর নিষিদ্ধকরণ আইন-২০২১ শুরু থেকেই বিতর্কিত ছিলো। এতদিন যাবত এটি শুধু হিন্দু নারীদের ইসলামে ধর্মান্তরের বিরুদ্ধে প্রয়োগ হচ্ছিলো। কোনো হিন্দু যুবক মুসলিম নারীকে বিবাহের জন্য ইসলামে ধর্মান্তরিত হলে এটি প্রয়োগ হতো না। কিন্তু মুকুল-সায়মার ক্ষেত্রে তেমনটিই ঘটেছে। যা সাধারণ হিন্দুদের মাঝে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক হিন্দু উক্ত আইনের চরম অসঙ্গতির কথা উল্লেখ করে বলেন, যখন কোনো হিন্দু মেয়ে কোনো মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে তখন এটি রাষ্ট্রের চোখে আইনি ভাবে সমস্যা দাঁড়াচ্ছে। সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। লাভ জিহাদের নাম দিয়ে ভীতি ছড়ানো হচ্ছে। পক্ষান্তরে কোনো মুসলিম মেয়ে যদি হিন্দু ছেলেকে বিবাহ করে এতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। একে তারা প্রকৃত ভালোবাসার নাম দেয়। অথচ আগে এমনটি ছিলো না।

এছাড়া বিজনৌরের স্থানীয় মুসলিমরা সায়মা, তার পরিবার ও দুই কাজীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ও গ্রেফতারের বিরোধিতা করে তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

সূত্র: মুসলিম মিরর

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *