অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পুরোনো বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল, তাই আমরা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সব পর্যায় থেকে আমরা অনেক বড় সহায়তা পাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব-আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটের (ডুব্লউজিএস) এক প্লেনারি সেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম কাজ ছিল ভেঙ্গে পড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা এবং দ্বিতীয় কাজ বাংলাদেশকে আবার নতুনভাবে গড়ে তোলা। নতুন সমাজ নির্মাণ এবং জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দাঁড় করানো। তিনি বলেন, আমরা এ লক্ষ্যে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করে ১৫টি কমিশন গঠন করেছি। এখন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের আলোকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে- কোন কোন প্রস্তাব গ্রহণে আমরা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ এগিয়ে নেয়ার জন্য একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরে পর আবার নিজের কাজে ফিরে যাবেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় আমরা খুব খুশি। গুম, খুন, টর্চার সেল এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে ছাত্রদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে- তার সবকিছু ডকুমেন্ট আকারে প্রতিবেদনে এসেছে। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসী আবারও জানতে পারলো তারা কী-ধরনের নির্মমতা চালিয়েছিল।
স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশের অর্থনীতি একেবারে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, অর্থনীতি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা সম্পূর্ণ পঙ্গু করে দিয়েছে। ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যাংক থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে। আর প্রতিবছর ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে।
গত ১৫-১৬ বছর বাংলাদেশে কোন নির্বাচন হয়নি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ভুয়া নির্বাচন করেছিল।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সামাজিক ব্যবসা হলো সমাজের সমস্যা সমাধানের উপায়। মুনাফা করাটাই এর একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। এর উদ্দেশ্য টাকা উপার্জন করা এবং সমাজের বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করা।
সূত্র: বাসস