যুব বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশের বিদায়

আইসিসি অনূর্ধ্ব–১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ রানে হেরেছে বাংলাদশের যুবারা। আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলার রোহানাত দোল্লাহ বর্ষণ ও শেখ পারভেজ জীবনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। সেমিফাইনালে যেতে বাংলাদেশ যুবাদের লক্ষ্য ছিল ৩৮.১ ওভারের মধ্যে ১৫৬ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উবাইদ শাহর আগুনে পেসে ১৫০ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। ফলে যুব বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় মাহফুজুর রহমান রাব্বির দলের।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বেনোনিতে টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি। শুরু থেকেই পাকিস্তানকে চাপের মধ্যে রাখে বাংলাদেশ। নবম ওভারে শামিল হোসেনকে বোল্ড করে যুবা টাইগারদের ব্রেকথ্রু এনে দেন বর্ষন। গতি দিয়ে পাকিস্তানি ব্যাটারদের দুর্বিষহ অবস্থায় ফেলেন ডানহাতি এই পেসার। পরের ওভারেই উইকেটের পেছনে থাকা আশিকুর রহমান শিবলীর ক্যাচে পরিণত করে ফেরান আজান আওয়াইসকে।

পেসের পর স্পিনেও সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তান। শেখ পারভেজ জীবনের কাছে সুযোগই পাচ্ছিলেন না কোনো ব্যাটার। যদিও সপ্তম উইকেটে ৪৩ রান যোগ করেন আরাফাত মিনহাস ও আলি আসফান্দ। কিন্তু এই জুটি বড় বিপদ হওয়ার আগেই বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন জীবন। আহরার আমিনের দুর্দান্ত এক ক্যাচে আসফান্দকে ফেরান ডানহাতি এই স্পিনার। সর্বোচ্চ ৩৪ রান করা মিনহাস দলের শেষ ব্যাটার হিসেবে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বির বলে।

বাংলাদেশের হয়ে বর্ষণ-জীবন দুজনেই শিকার করেন সর্বোচ্চ চারটি করে উইকেট। কাকতালীয়ভাবে বল হাতে কেউই ২৪ রানের বেশি দেননি। তাদের দারুণ পারফরম্যান্স বিফলে না যাওয়াটা এখন নির্ভর করছে ব্যাটারদের ওপর। পাকিস্তান অবশ্য জিতলেই সেমিফাইনালে চলে যাবে। কেননা ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট তাদের। তবে বাংলাদেশকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে যেতে হলে ১৫৫ রান টপকাতে হবে ৩৮.১ ওভারের মধ্যেই।

জয়ের জন্য ১৫৬ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই এলোমেলো ব্যাটিং করতে থাকে বাংলাদেশ। আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ের জন্য বেশি পরিচিত জিসান আলম। পাকিস্তানের বিপক্ষে সহজ লক্ষ্য তাড়ায়ও নিজের স্বভাবসূলভ ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করতে থাকেন তিনি। প্রথম ওভারে থেকেই পাকিস্তানের বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া জিসান অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে উবাইদ শাহর অফ স্টাম্পের বাইরের লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিতে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।

ফলে দারুণ শুরু করা জিসানকে ফিরতে হয় ১২ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলি। উবাইদের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জিসানের মতো খোঁচা দিতে গিয়ে আউট হয়েছেন বাংলাদেশের এই উইকেটকিপার ব্যাটার। ভালো শুরু করলেও সেটা ধরে রাখতে পারেননি চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান। আলী রাজার বলে তিনিও সাদ বাগকে ক্যাচ দিয়েছেন। রিজওয়ান ২০ রান করে ফিরলে পঞ্চাশের আগেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আহরার আমিন ও আরিফুল ইসলাম। যদিও তাদের জুটি খুব বেশি বড় হতে দেননি উবাইদ। তরুণ এই পেসারের অনেকটা বাইরের বলে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন আহরার। তবে এজ হয়ে স্লিপে গেলে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ ক্যাচ লুফে নেন হারুন আরশাদ। বাঁহাতি এই ব্যাটারকে ফিরতে ২০ রানে। আহরার আউট হওয়ার পর ফিরেছেন আরিফুলও। দ্রুত উইকেট হারানোর পর শেষ দিকে বর্ষণ ও মারুফ ২৩ রানের জুটি গড়লেও জয় পাওয়া হয়নি টাইগার যুবাদের। পাকিস্তানের হয়ে একাই ৫ উইকেট নেন উবাইদ শাহ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *