সপ্তাহ পেরুলেই মার্কিন নাগরিকদের বয়স মুহূর্তেই বেড়ে যাবে ১ ঘণ্টা। কারণ, ‘ডে লাইট সেভিং টাইম’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে এগিয়ে নেয়া হবে ঘড়ির কাঁটা। দিনের আলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন মার্কিন নাগরিকরা।
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও শত বছরের পুরোনো রীতি এটি। গ্রীষ্মকালে এক ঘণ্টা এগিয়ে নেয়া হয় ঘড়ির কাটা। সূর্যের আলো থাকতেই শেষ হয় অফিস-আদালত-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। ফলে চাপ কমে বিদ্যুতের ওপর। পাশাপাশি, পরিবারকে সময় দেয়ার সুযোগও পান কর্মজীবীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিক বলেন, ঘুম একটু কম হলেও অনেক সময় বেঁচে যায়। অফিস শেষ করে পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটানো যায়। একটু ঘুরতে যাওয়া যায়। বেশ ভালো লাগে।
১৭৮৪ সালে বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন সর্বপ্রথম এই ধারণা দিয়েছিলেন। সাধারণ সময়ের তুলনায় এক ঘণ্টা আগে সবাইকে ঘুম থেকে ওঠার পরামর্শ দেন তিনি। তবে সরাসরি ‘ডে লাইট সেভিং টাইম’ এর ধারণা দেন ব্রিটিশ বিল্ডার উইলিয়াম উইলেট। ‘দ্য ওয়েস্ট অব ডে লাইট’ শিরোনামে প্রকাশ করেন একটি বই।
এরপর ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত বিল উত্থাপিত হলেও তা পাস হয়নি। ১৯ শতকে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে এই পদ্ধতির প্রচলন শুরু হয় জার্মানিতে। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপসহ অনেক দেশে।
শুরুর দিকে সময়ের এই পরিবর্তন নিয়ে বেশ ঝামেলাতেই পড়তে হতো যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দাদের। জানা যায়, ভার্জিনিয়ার মাউন্ডসভিল থেকে ওহাইও’র স্টিউবেনভিল পর্যন্ত মাত্র ৩৫ মাইলের বাসযাত্রায় একজন যাত্রীকে তার ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তন করতে হতো ৭ বার। পরে ষাটের দশকে কংগ্রেসে পাস হয় ‘ইউনিফর্ম টাইম অ্যাক্ট’। যার আওতায় একটি রাজ্যের সবগুলো শহর একই সময় ব্যবস্থা মানতে বাধ্য।
এ প্রসঙ্গে একজন বলেন, একটা শহরে যদি ‘ডে লাইট সেভিং টাইম’ চলে, তাহলে তাদের জীবন-যাপনও সেই সময় অনুযায়ী হয়। পাশের শহর যদি সেই সময় না মানে, তাহলে আবার কনফিউশন তৈরি হয়।
প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ এলাকায় দুদফা বদলানো হয় ঘড়ির কাঁটা। দিনের আলোকে কাজে লাগাতে গ্রীষ্মকালে এক ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয় সময়, অন্যদিকে শীতকালে ফিরে যাওয়া হয় পূর্বের সময়ে। প্রায় একশ বছর ধরে বিশ্বের অন্তত ৭০টি দেশে চালু রয়েছে এই ব্যবস্থা।