১১ মাসের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে ভাঙনের মুখে ইসরায়েলের অর্থনীতি। এমনটাই বলছেন দেশটির অর্থনীতিবিদরা। বেড়েছে ঋণ, বিপরীতে তেমন বাড়েনি আয়। বন্ধ হয়ে গেছে বহু ক্ষুদ্র ব্যবসা। হারাতে হয়েছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, শিগগিরই যুদ্ধ না থামালে সামনে ভয়ংকর পরিস্থিতি দাঁড়াবে।
প্রতি বছর এই সময়টায় জেরুজালেমে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। একইসাথে ধর্মীয় গুরুত্ব, সমৃদ্ধ ঐতিহ্য আর দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যের কারণে প্রায় সারা বছরই থাকে নানান দেশের পর্যটকদের আনাগোনা।
তবে, এখন প্রায় জনমানবহীন শহরটি। শহরের বেশীর ভাগ দোকানের দরজাতেই ঝুলছে তালা। প্রায় ১১ মাস ধরে চলা সংঘাতে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
তারা জানান, জেরুজালেমে সবসময় বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা থাকতো। এখন কোনো পর্যটক নেই। পর্যটনকে কেন্দ্র করেই তো আয় আমাদের। আর কতদিন এসব চলবে জানা নেই।
সেখানের আইকনিক আমেরিকান কলোনি হোটেল থেকেও কর্মী ছাঁটাই করতে হয়েছে। যারা চাকরি হারান নি, তাদের বেতন কর্তন করা হয়েছে।
হোটেল কতৃপক্ষ জানিয়েছে, মাঝখানে কয়েক মাসের জন্য তারা হোটেল বন্ধ রাখতে চেয়েছিলো। তারপর সেই সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। কিন্তু খরচ সামলাতে বাধ্য হয়ে কিছু কর্মী ছাঁটাই করতে হয় তাদের।
একই চিত্র দেখা গেছে ইসরায়েলের ব্যস্ততম বন্দর হাইফায়। আগে যেখানে দম ফেলার ফুরসত পেতো না কর্মীরা, সেখানে এখন একেবারেই শান্ত চারপাশ। কাটছে অলস সময়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান হামাস-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগে আস্থা হারিয়েছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা। চলতি বছর ১৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী কমেছে দেশটির জিডিপি।
বিপরীতে গত বছরের তুলনায় কয়েক গুণ ঋণ বেড়েছে। এই সংকট কাটানোর একমাত্র উপায় যুদ্ধ বন্ধ। শিগগিরই সংঘাত না থামালে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হবে বলেও সতর্ক করছেন অর্থনীতিবিদরা।
ইসরায়েলের অর্থনীতিবিদ জ্যাকব শেইনিন বলেন, আমাদের জিডিপি তিন দশমিক সাত শতাংশ হারে বেড়েছে। যার অর্থ হচ্ছে চলতি বছর আমরা ১৪ বিলিয়ন ডলার জিডিপি হারিয়েছি। এটা কেবল জিডিপির হিসাব। এর বাইরেও আমরা অনেক কিছু হারাচ্ছি, ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। শিগগিরই যুদ্ধ না থামালে সব হারাতে হবে।
এছাড়াও কোভিডকালীন ২ বছরে দেশটিকে যে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিলো, সংঘাতের ১১ মাসেই সেই রেকর্ড ছুঁই ছুঁই বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।