বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অতীত সমালোচনা কিংবা নৈরাজ্যের বদলে নৈরাজ্য কোনও সমাধান হতে পারে না। বুধবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে ভার্চুয়ালি বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
এসময় দীর্ঘ দেড় দশকের আওয়ামী শাসনের অবসানের পর দেশের প্রতিটি সেক্টরকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে বিএনপির নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রস্তুত থাকতে হবে। বলেন, আগের সরকার পুলিশসহ সব বাহিনীকে দলীয়করণ করে দেশের আইন ও বিচারব্যাবস্থাকে ধ্বংস করেছিল।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবার আহ্বানও জানান তারেক। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কোনও হামলা কিংবা অত্যাচার যেন না হয়, এজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির নাম ব্যবহার করে কোনও অপকর্ম করলে তাকেও আইনের হাতে তুলে দেবার আহ্বান জানান দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে আগের বিভীষিকাময় সময়কে বাংলাদেশে আর ফিরে আসতে না দেয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে ঢেলে সাজাতে হবে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্রগঠনে নিয়োগ কিংবা প্রমোশনে মেধার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশকে বৈদেশিক ঋণনির্ভরতা কমানোসহ উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। দেশীও কর্মসংস্থান বাড়ানো, সম্ভাবনাময় খাত যেমন গার্মেন্টস, ওষুধ, আউটসোর্সিং সেক্টরকে বিকশিত করতে হবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ ও বিচার ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হবে না, এমন সমাজ গড়ে তোলার প্রতি জোর দেন তারেক রহমান।
এসময় দেশের জ্ঞানী, মেধাবী ও অভিজ্ঞদের নিয়ে দেশের সংসদে উচ্চকক্ষ গঠন করার প্রয়োজনও উল্লেখ করেন তারেক রহমান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দেশের সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন এবং বিজয়োল্লাস করে। আর আজ কোনো ধরনের বাধা-বিপত্তি ছাড়াই রাজধানীতে সমাবেশ করছে বিএনপি। সমাবেশে তারেক রহমানের বক্তব্যের পরই ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।