মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সে ১০ মাস সময়ে মায়ের কাছে কুরআন শরীফের হিফজ সম্পন্ন করেছেন ৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন বয়সি আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুম। জানা গেছে হিফজের সময় কোরআনের বাংলা অর্থও শিখেছেন আহমাদ।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকার যাত্রাবাড়ির মাদরাসাতু উসওয়াতি ফাতিমাহ রাদিয়াল্লাহু আনহায় তার মায়ের কাছে হিফজ সম্পন্ন করেন আব্দুল্লাহ মাসুম।
আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুমের বাবা টিভি উপস্থাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাসুম বিল্লাহ বিন রেজা গণমাধ্যমকে বলেন, মহান রব দয়া মায়া করে আমার কলিজার টুকরো আহমাদকে তাঁর মহান গ্রন্থ আল কোরআন হিফজ করার তাওফিক দান করেছেন। আমাদের সন্তানের এ অর্জন আমাদের জন্য শুধু গর্বের নয়, দায়িত্বেরও। আমরা চাই, আহমাদ যেন একদিন বিশ্বজুড়ে কোরআনের আলো ছড়ায় ও মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থী।
আহমদের মায়ের একান্ত ইচ্ছা, আহমদ যেন বিশ্বমানের মুত্তাকি, মুখলিস হাফেজ ও আলেম হিসেবে গড়ে ওঠেন। আল্লাহ তাআলা তাকে সেই তাওফিক যেনো দান করেন, সে দোয়াই কামনা করেছেন তিনি।
আহমদের এমন কৃতিত্বে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন আলেমগণ ইসলামীক স্কলাররা।
ক্বারী শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আজহারীর বলেন, এই বয়সে হিফজ সম্পন্ন করার ঘটনা বিশ্বে বিরল। ইরান বা আলজেরিয়ায় ৫ বছর বয়সে হিফজের দৃষ্টান্ত থাকলেও আহমাদের মতো সাড়ে চার বছরে এ অর্জন অভূতপূর্ব।
হাদিস ফাউন্ডেশন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. আহমাদ আবদুল্লাহ ছাকিব বলেন, বাবা-মায়ের সঙ্গে এই বিস্ময় শিশু যখন আমার মারকাযে বেড়াতে আসে, তখন আমি নিজেই স্তব্ধ হয়ে যাই। শুধু কোরআন হিফজ নয়, সে কুরআনের শব্দার্থও শিখে নিয়েছে। বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় ঝরঝরে রিডিং করতে পারে। আরবিতে তার স্পিকিং দক্ষতাও অসাধারণ। সব মিলিয়ে এটি এক অবিশ্বাস্য প্রতিভা। এখানেই তার যাত্রা শেষ নয়। বুখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিস ধারাবাহিকভাবে মুখস্থ করার লক্ষ্যে সে এগিয়ে যাবে এটাও সে জানায়, মাশাআল্লাহ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে মুসলিম উম্মাহর একজন সুবিজ্ঞ মুখলিস আলেমে দ্বীন হিসাবে কবুল করুন।
ধানমন্ডি তাক্বওয়া মসজিদের খতিব মুফতী সাইফুল ইসলাম বলেন, আল্লাহু আকবার, মাশাআল্লাহ তাবারাকাল্লাহ, এটা বাংলাদেশের জন্য মহান এক গৌরব। আমি বাংলাদেশের মায়েদের প্রতি অনুরোধ করবো, আপনারা যদি সন্তানদের কোরআনের প্রতি ভালোবাসা ও অধ্যবসায় শেখাতে পারেন, তবে এমন সাফল্য সম্ভব। নিজের সন্তানকে সময় দিন, তাদের মননশীলতা ও প্রতিভা বিকাশে সহযোগিতা করুন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সন্তানকে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতার পথিক বানিয়ে দিন, আমিন।
রাজধানীর গুলিস্তান পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতিব ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুফতী ইমরানুল বারী সিরাজী বলেন, কুরআনুল কারীম আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য শ্রেষ্ঠ মুজেজা এবং অলৌকিক বিষয়। আল্লাহ পাকের বিশেষ তৌফিকের ফলেই এই ছোট্ট শিশুটি অতি অল্প বয়সে স্বল্প সময়ে কুরআনুল কারীমের হিফজ করতে পেরেছে। আমার জানামতে এত কম বয়সে ও অল্প সময়ে কুরআনের হিফজ করার সৌভাগ্য বিশ্বের মাঝে বাংলাদেশের এই ছোট্ট শিশুটিই করেছে। আল্লাহ পাক তাকে বিশ্বসেরা আলেম ও দাঈ হিসেবে কবুল করেন।
