অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে ৭৯ রানে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিলো অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করতে নেমে হারজাস সিংয়ের ফিফটি ও হিউ উইবজেন, ওলিভার পিক ও হ্যারি ডিক্সনের চল্লিশোর্ধ রানের ওপর ভর করে ২৫৩ রানের লড়াকু পুঁজি সংগ্রহ পায় অজিরা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাহলি বেয়ার্ডম্যান ও রাফ ম্যাকমিলানের বোলিং তোপে ৩৭ বল বাকি থাকতেই ১৭৪ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। ফলে এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনাল হারলো ভারত।
এর আগে, ২০১০ সালে যুব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর ২০১২ ও ২০১৮ আসরে ফাইনাল খেলেও ট্রফিতে চুমু আঁকতে পারেননি তারা। দুইবারই হেরেছিল ভারতের বিপক্ষে। এশিয়ার দলটিকে হারিয়ে সেই ক্ষতে প্রলেপ দিল তাসমান সাগর পাড়ের দলটি।
রোববার ( ১১ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনিতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। মাত্র ১৬ রানেই ভেঙে যায় অজিদের উদ্বোধনী জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক হিউ উইবজেনকে সঙ্গে নিয়ে ৭৮ রানের জুটি গড়েন ওপেনার হ্যারি ডিক্সন। তাদের জুটির কল্যাণে এক উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ৯৪ রান। এরপর মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটার বিদায় নেন। ৬৬ বলে ৪৮ রান করে ফেরেন উইবজেন। আর ৬৬ বলে ৪২ রান করে ফেরেন হ্যারি ডিক্সন।
চতুর্থ উইকেটে রায়হান হিক্সকে সঙ্গে নিয়ে ৬৬ রান যোগ করেন হারজাস সিং। দলীয় ১৬৫ ও ১৮১ রানে চতুর্থ ও পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ফেরেন রায়হান হিক্স ও হারজাস সিং। ২৫ বলে ২০ রান করেন হিক্স আর ৬৪ বলে তিন চার আর তিন ছক্কায় ৫৫ রানে ফেরেন হারজাস সিং। এরপর ওলিভার পিকের ৪৩ বলের অপরাজিত ৪৬ রানে ভর করে ২৫৩ রান তুলতে সমর্থ হয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের পক্ষে রাজ লিমবানি সর্বোচ্চ ৩ উইকেট, নামান তিওয়ারি ২ টি উইকেট নিয়েছেন। সৌমি পান্ডে ও মুশির খান ১ টি করে উইকেট পেয়েছেন।
২৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে কলাম ভিদলারের আউট সুইং ডেলিভারিতে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার আরশিন কুলকারনি। দলীয় ৩ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে ভারতের। আরেক ওপেনার আদর্শ সিং অবশ্য একপাশে বেশ দায়িত্ব নিয়েই খেলছিলেন। তবে অন্যপাশে ততক্ষণে নড়বড়ে চেহারা পরিষ্কার হয়ে যায়। মাহলি বিয়ার্ডম্যানের ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে মুশির খানের ইনিংস বড় হয়নি, ফিরতে হয়েছে ২২ রান করে।
অধিনায়ক উদয় স্মরণ ফিরতেও সময় নেননি, ৮ রানের বেশি আসেনি তার ব্যাট থেকে। দলীয় শতক পূরণ হওয়ার আগে স্মরণের সাথে সাথে বিদায় নেন শচীন দাস, প্রিয়াংশু মলিয়া, আরাভেলি অবিনাশ। যথাক্রমে প্রথম দু’জনের ব্যাটে ৯ ও তৃতীয় জন বিদায় নেন কোনো রান না করেই। একপাশ আগলে রাখা আদর্শ তখনো ক্রিজে। দলের শতক পূরণ হলেও, ব্যক্তিগত ৪৭ রানে ফিরতে হয় আদর্শকে। শিকারি বিয়ার্ডম্যান এই উইকেট তুলে ৩ উইকেট পুরেছেন ঝুলিতে।
শেষদিকে মুরুগান অভিষেক একা হাতে লড়াই চালান, তবে তা যথেষ্ট ছিল না। নামান তিওয়ারির সাথে ৪৬ রানের জুটি কেবল ব্যবধান কমিয়েছে। ব্যক্তিগত ৪২ রানে অভিষেক যখন ফেরেন, ভারত ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রানে। আর ৪ ওভারের মধ্যে সৌমি পান্ডের উইকেট পড়লে, তিওয়ারি ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন একা। ভারত অলআউট হয় ১৭৪ রানে।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে মাহলি বিয়ার্ডম্যান ও রাফ ম্যাকমিলান দুজনেই ৩ টি করে উইকেট নিয়েছেন। কালাম ভিদলার পেয়েছেন ২ টি উইকেট। ১ টি করে উইকেট নিয়েছেন চার্লি অ্যান্ডারসন ও টম স্ট্রাকার