সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বিকেল থেকে আজ মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
নিহতদের মধ্যে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেনসহ অধিকাংশই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী রয়েছেন বলে জানা গেছে। তালিকায় বিএনপির দুই নেতাকর্মীও আছেন।
নিহতরা হলেন, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, তার ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন, ভাতিজা সজিব হোসেন, ভাগ্নে আশিকুর রহমান, আত্নীয় সাকের আলী ও গাড়িচালক শাহিন হোসেন।
এছাড়া ওই আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের ছোড়া গুলিতে কল্যাণপুর গ্রামের আদম আলী (২৫), কোলা গ্রামের আনাজ বিল্লাহ (১৭) ও কুড়িকাউনিয়া গ্রামের আনাজ আলী (১৮) নিহত হয়েছেন। তারা শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে জানান, কিছু লোক শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আনন্দ মিছিল বের করে ও জাকির হোসেনের বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করে। এ সময়, জাকির হোসেন তার অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
পরে গ্রামবাসীরা জাকির হোসেনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গণপিটুনি দিলে জাকির হোসেনসহ ছয় জন নিহত হয়। মঙ্গলবার দুপুরের পর সেনাবাহিনী এলাকায় এসে তাদের দাফনের ব্যবস্থা করে।
অন্যদিকে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারি গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী আসাফুর রহমান (৪০), মৃগাডাঙ্গা গ্রামের তৌহিদ ইসলাম (৩০), সাইফুল ইসলাম (২৫), বিএনপি কর্মী জাহিদ হোসেন (২৮) ও ফারুক হোসেন (৩৫) নিহত হয়েছেন।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে সদর উপজেলার বৈকারি গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী আসাফুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। রাত নয়টার দিকে মৃগাডাঙ্গা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে মৃগাডাঙ্গা গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী তৌহিদ ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, বিএনপির কর্মী জাহিদ হোসেন ফারুক হোসেন নিহত হয়।
এছাড়া তালা সদরের দক্ষিণ আটারই গ্রামের বিএনপি কর্মী কাদের মোড়লও (৬৫) নিহত হয়েছেন। জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।
এদিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির যমুনা টিভিকে জানিয়েছেন, সাতক্ষীরা সদর থানা, শ্যামনগর থানা, জেলা ট্রাফিক কার্যালয় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া জেলার বিভিন্নস্থানে হামলা ও ভাঙচুরের খবর পাচ্ছি। জেলার সাতটি উপজেলায় রাতের মধ্যে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন হয়ে যাবে। আগামীকালের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।