সম্পত্তি কাল হলো- পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মা-সন্তানের সম্পর্কে। গর্ভজাত দুই সন্তানের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে শেষমেষ আদালতে ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধা খুরশিদা আক্তার। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তার জবানবন্দি গ্রহণ করে বড় ছেলে, বড় মেয়ে ও মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। উচ্চশিক্ষিত পরিবারে, মায়ের প্রতি সন্তানদের এমন আচরণে উষ্মা প্রকাশ করেন আদালত। তবে অভিযুক্ত বড় সন্তানের দাবি, সম্পত্তি পেতে তারই ছোট বোন ব্যবহার করছেন মাকে।
জানা যায়, রাজধানীর কাফরুল থানার ইব্রাহিমপুরের প্রয়াত ওসি হাফিজুর রহমানের এক ছেলে, দুই মেয়ের পরিবার নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করতেন খুরশিদা আক্তার। ভরণপোষণের টাকা জোগাড় করতে তিন মাস আগে নিজ সম্পত্তি বেঁচে দেন খুরশিদা। সেই টাকার ভাগসহ বাকি সম্পত্তি লিখে দিতে বৃদ্ধা মায়ের ওপর নানা সময় বল প্রয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ। অথচ খুরশিদা আক্তারের এই দুই সন্তানই প্রতিষ্ঠিত। বড় ছেলে সোহেল বেসরকারি একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপক ও বড় মেয়ে তাসলিমা সুমি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বৃদ্ধা খুরশিদা আক্তার বলেন, মেয়ে-মেয়ের জামাই, ছেলে মিলে আমাকে মারধর করে। ছেলের বউ নানা বাজে কথা বলে।
তিনি অভিযোগ করেন, তার শেষ সম্বলটুকু লিখে নিতে নানা সময়ে চাপ দেন বড় ছেলে হামিদুল হক সোহেল, বড় মেয়ে তাসলিমা আক্তার সুমি ও তার জামাই সেলিম রেজা। এক পর্যায়ে সেটি রূপ নেয় নির্যাতনে। নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে তিনি থানায় জিডি করেন। তবে বন্ধ হয়নি নির্যাতন। তাই সন্তানদের নির্যাতন আর সইতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এদিকে, আদালত বাদীর জবানবন্দি নেন। পরে অভিযুক্ত ওই দুই সন্তানসহ মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগীর আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, সন্তানরা এই সামাজিক অবস্থানে থেকেও লোভ করেছেন সেজন্য আদালত উষ্মা প্রকাশ করেন। উচ্চশিক্ষিত হলেই যে, ভালো মানুষ না, সেটিও বলেছেন আদালত।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খুরশিদার বড় ছেলে সোহেল। তিনি বলেন, মাকে ব্যবহার করে সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে চায় তাদেরই ছোট বোন নুসরাত জাহান। সেজন্য তাদের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে।