চিন্ময়সহ ইসকনের ১৭ সদস্যের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেসের (ইসকন) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১৭ জনের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন ৩০ দিন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এছাড়াও, এই ১৭ ব্যক্তি ও তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের হিসাবও (আমদানি ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের হিসাব ব্যতীত) স্থগিত করতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এ নির্দেশনা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে এদের ঋণ, আমানত, ব্যবসাসহ যাবতীয় তথ্য আগামী তিন দিনের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠাতে বলা হয়েছে।

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২৩(১)(গ) ধারার আওতায় এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সাধারণত অর্থপাচার, অবৈধ লেনদেন হলে এই আইনে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে বিএফআইইউ।

অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের তালিকায় রয়েছেন– চন্দন কুমার ধর ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। তাকে গ্রেফতার এবং কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি চলমান আছে। এসব কর্মসূচি থেকে ইসকনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে।

ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিত হওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় আরও যারা রয়েছেন– কার্ত্তিক চন্দ্র দে, অনিক পাল, সরোজ রায়, সুশান্ত দাস, বিশ্ব কুমার সিংহ, চন্ডিদাস বালা, জয়দেব কর্মকার, লিপী রানী কর্মকার, সুধামা গৌর দাস, লক্ষণ কান্তি দাশ, প্রিয়তোষ দাশ, রূপন দাস, রূপন কুমার ধর, আশীষ পুরোহিত, জগদীশ চন্দ্র অধিকারী এবং সজল দাস।

হিসাব জব্দ হওয়া ব্যক্তিদের নামে একক মালিকানা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট স্থগিত থাক‌বে। এসব হিসাবে আগামী ৩০ দিন কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবে না। প্রয়োজনে হিসাব স্থগিতের সময় বাড়ানো যাবে। বিএফআইইউয়ের চিঠিতে হিসাব স্থগিত হওয়া ব্যক্তিদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তাকে চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয়। আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে পাঠানোর পথে তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আটকে দেয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীরা। তাদের সরিয়ে দিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণকে কারাগারে নেয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *