বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন সেনাসদরের কর্নেল স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার।
আজ বুধবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী প্রশাসনকে ৬০ দিন সহায়তা করতে এই তথ্যটি সঠিক নয়। ৬০ দিনের জন্য নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কত দিন থাকব এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। কারণ সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে, সরকারই এটা নির্ধারণ করবে কত দিন মোতায়েন থাকা প্রয়োজন।’
‘মানবাধিকার লঙ্ঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রতিরোধ করার ব্যাপারে সেনাবাহিনী অত্যন্ত সচেতন। এই ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে যে, কোনো ধরনের পরিস্থিতিতে যেন আমরা—সেনাবাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হতে না দেই, সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এটা প্রতিরোধ করার,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে এই ধরনের (মানবাধিকার লঙ্ঘন) কোনো যেন ঘটতে না দেই। যে ঘটনাগুলো ঘটছে আপনারা সেগুলো জানতে পারছেন। এর বাইরে আমাদের কার্যক্রমের কারণে কতগুলো পরিস্থিতিতে এই ধরনের কোনো কিছু প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে, এটা হয়তো অনেক সময় জনসম্মুখে আসে না।’
‘যেমন শুধু শিল্প খাতের কথাই যদি আমরা বলি, শিল্প খাতে এ পর্যন্ত ছয় শতাধিক শ্রমিক অসন্তোষের (আনরেস্ট) ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অনেকগুলো সহিংস ছিল, বিশেষ করে শুরুর দিকের যে ঘটনাগুলো। আমাদের সঙ্গে অবশ্যই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীও ছিল, তারা যদি সময় মতো গিয়ে তাদের (শ্রমিক) শান্ত করার ব্যবস্থা না করতেন, হয়তো এর থেকে অনেক বেশি ঘটনা ঘটতে পারতো,’ যোগ করেন তিনি।
কথা প্রসঙ্গে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, ‘পরিস্থিতির প্রয়োজনে অনেক কিছু করতে হয় কিন্তু সেনাবাহিনী টার্গেট করে কাউকে মেরেছে এ রকম কোনো ঘটনা হয়নি।’
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। পুলিশের কাছে অপরাধের যে তথ্য থাকে, এটা নিয়ে একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ আমরা করিয়েছি। সে অনুযায়ী, সেনাবাহিনী মোতায়েন হওয়ার পরে বা নির্বাহী ক্ষমতা পাওয়ার পরে আগের তুলনায় অপরাধের সংখ্যা কমেছে। নথিভুক্তি কমেছে। তার মানে পরিস্থিতির অবনতি হয়নি। আমাদের হয়তো প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতি হয়নি, এটা অনেকে বলতে পারেন।’
ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইন্তেখাব।