শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টায় সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আহতদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, তার স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না, রাজু বিশ্বাস, মাহাবুব খান মুরাদ, লিন্টু মন্সী, গোপালগঞ্জের সালমান সিকদার, সুজন সিকদার, সবুজ সিকদার, ঢাকার মতিঝিল এলাকার নাসির আহমেদ মোল্লা, বাদশা মোল্লা, নিশান, হাসান, মাতুয়াইলের আলাউদ্দিনসহ ১৬ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও তিনজনকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অন্যরা স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীসহ কয়েকজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে সদর উপজেলার বেদগ্রাম মোড়ে অনুষ্ঠিত বিএনপির একটি পথসভা শেষে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে তারা রওনা হন। সদর উপজেলার ঘোনাপাড়ায় পৌঁছলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ২০০ থেকে ৩০০ নেতাকর্মী মাইকিং করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিন বলেন, আমরা বেদগ্রামের মোড়ে শান্তিপূর্ণ পথসভা শেষ করে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর বাবা-মায়ের কবর জিয়ারতের উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলাম। ঘোনাপাড়া মোড়ে পৌঁছলে গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিন মোল্লা, গোবরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জিকরুল ফকির, স্থানীয় আওয়ামী নেতা আলিমুজ্জামান ও হাসান মোল্লার নেতৃত্বে গাড়িবহরে হামলা করা হয়।
গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আলিমুজ্জামান বলেন, বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা গাড়িবহর নিয়ে যাওয়ার সময় ঘোনাপাড়া এলাকায় বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। তাদের বাধা দিলে আমাদের ওপর হামলা করেন। এতে আমি নিজেই আহত হয়েছি।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ফারুক আহমেদ বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টায় আহতাবস্থায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও তার স্ত্রী রওশন আরা রত্নাসহ ১৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এদের অধিকাংশের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্রের কোপ রয়েছে। তাদের সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলেন। কেন এ ঘটনা ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে কেউ কেউ বলছেন সেখানে ব্যানার টানাটানি নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থল থেকে অদূরে পাথালিয়া বাংলালিংক টাওয়ারের পাশ থেকে শওকত আলী দিদারের লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।